বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত পৌনে ৪ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সুখবর এসেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানিয়েছে, মে মাসের বেতন-ভাতা আগামী ১ জুনের মধ্যে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হতে পারে। এই খবর শিক্ষকদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে, তবে কিছু চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে।
এমপিও শিক্ষকদের মে মাসের বেতন নিয়ে বড় ঘোষণা
শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই ধাপে মোট ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৪২৪ জন শিক্ষক ও কর্মচারী বেতন-ভাতা পাবেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৯১ হাজার ১৬১ জন স্কুলের এবং ৮৭ হাজার ২৬৩ জন কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন। এই বিশাল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন প্রক্রিয়াকরণ একটি জটিল কাজ, তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মে মাসের বেতন শিক্ষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছানোর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। ২৪ মে তারিখে ইতোমধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের জন্য সরকারি আদেশ (Government Order – GO) জারি করা হয়েছে। এই আদেশের পর বেতন বিতরণের কার্যক্রম আরও দ্রুত এগিয়েছে। কর্মকর্তারা আশাবাদী যে ১ জুনের মধ্যে অর্থ শিক্ষকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে।
ইএফটি ব্যবস্থার সুবিধা
একসময় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা অ্যানালগ পদ্ধতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হতো। এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষকদের ব্যাংকে গিয়ে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়াতে হতো, যা ছিল সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টকর। বর্তমানে, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT) ব্যবস্থার মাধ্যমে বেতন সরাসরি শিক্ষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে। এটি শিক্ষকদের জন্য একটি বড় স্বস্তি এনেছে।
তবুও কেন ভোগান্তি?
ইএফটি ব্যবস্থা চালু হলেও, অনেক শিক্ষক এখনও বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলে অস্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবহেলা এবং উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসারদের গাফিলতির কারণে অনেকের বেতন প্রক্রিয়াকরণে বিলম্ব হচ্ছে। এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য শিক্ষকরা বারবার অফিসে যাতায়াত করছেন, যা তাদের সময় ও শ্রমের অপচয় করছে।
শিক্ষকরা প্রত্যাশা করছেন, বেতন প্রক্রিয়াকরণ আরও স্বচ্ছ ও দ্রুত হবে। ইএফটি ব্যবস্থা চালু হওয়ায় তাদের জীবন অনেকটাই সহজ হয়েছে, তবে প্রশাসনিক জটিলতা এখনও পুরোপুরি দূর হয়নি। শিক্ষকরা চান, শিক্ষা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো আরও দায়িত্বশীল হয়ে এই সমস্যাগুলো সমাধান করুক।
শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা শিক্ষকদের ভোগান্তি কমাতে কাজ করে যাচ্ছেন। ইএমআইএস সেল এবং জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিসগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে এই প্রক্রিয়া আরও মসৃণ করার চেষ্টা চলছে। তারা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যা আর থাকবে না।
ফাইনাল কথা
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য মে মাসের বেতন নিয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের এই ঘোষণা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে, প্রশাসনিক অবহেলা ও গাফিলতি দূর করা গেলে শিক্ষকদের ভোগান্তি অনেকাংশে কমবে। শিক্ষকরা দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর, তাই তাদের প্রতি সরকারের আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।
শিক্ষা নিউজে শিক্ষা সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের আপডেট সবার আগে জানতে শিক্ষা নিউজের সোসাল হ্যান্ডেলগুলো অনুসরণ করুন।
Discover more from Shikkha News | শিক্ষা নিউজ
Subscribe to get the latest posts sent to your email.