শিক্ষা একটি জাতির মেরুদণ্ড। এটি কেবল জ্ঞান অর্জনের মাধ্যম নয়, বরং মানুষের মনে দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। সম্প্রতি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশে পাঠ করা শপথবাক্যে পরিবর্তন এনেছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর এবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও নতুন শপথবাক্য চালু করা হয়েছে। এই পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের মনে দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন শপথবাক্য
২০২৫ সালের ২১ মে, বুধবার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এক আদেশে জানিয়েছে যে, তাদের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশে নতুন শপথবাক্য পাঠ করা হবে। নতুন শপথবাক্যটি হলো:
আমি শপথ করিতেছি যে মানুষের সেবায় সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখিব। দেশের প্রতি অনুগত থাকিব। দেশের একতা ও সংহতি বজায় রাখিবার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকব। অন্যায় ও দুর্নীতি করিব না এবং অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিব না। হে মহান আল্লাহ/মহান সৃষ্টিকর্তা, আমাকে শক্তি দিন, আমি যেন বাংলাদেশের সেবা করতে পারি এবং বাংলাদেশকে একটি আদর্শ, বৈষম্যহীন ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়িয়া তুলিতে পারি। আমিন।
এই শপথবাক্যে দেশপ্রেম, মানবসেবা, একতা, এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান জোর দেওয়া হয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের মনে একটি ইতিবাচক ও নৈতিক মনোভাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে রচিত।
নতুন শপথবাক্যের তাৎপর্য
নতুন শপথবাক্যটি শিক্ষার্থীদের মনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ জাগ্রত করার লক্ষ্যে রচিত। এর মধ্যে রয়েছে:
- মানবসেবার প্রতিশ্রুতি: শিক্ষার্থীদের মনে মানুষের সেবার মনোভাব জাগ্রত করা।
- দেশের প্রতি অনুগত্য: দেশের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ সৃষ্টি।
- দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান: শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার পথে চলতে উৎসাহিত করা।
- বৈষম্যহীন সমাজ গঠন: একটি ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ার প্রতিশ্রুতি।
এই শপথবাক্য শিক্ষার্থীদের কেবল দেশপ্রেমী নয়, বরং নৈতিক ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
নতুন শপথবাক্য শিক্ষার্থীদের মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। শিক্ষকদেরও এই শপথবাক্য পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব বাড়বে। প্রতিদিনের সমাবেশে এই শপথ পাঠ শিক্ষার্থীদের মনে দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেম জাগ্রত করবে। তবে, এই শপথবাক্য কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা প্রয়োজন।
এই শপথবাক্য বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। শিক্ষার্থীদের মনে নৈতিক মূল্যবোধ ও দেশপ্রেম জাগ্রত করার মাধ্যমে এটি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। তবে, শপথবাক্য কেবল পাঠ করেই শেষ নয়; এর মর্ম শিক্ষার্থীদের জীবনে প্রতিফলিত হওয়া জরুরি। এজন্য শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই নতুন শপথবাক্য শিক্ষার্থীদের মনে দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি কেবল একটি শপথ নয়, বরং একটি প্রতিশ্রুতি একটি আদর্শ, বৈষম্যহীন ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি। আমরা আশা করি, এই শপথবাক্য শিক্ষার্থীদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং তারা দেশের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে।
শিক্ষা নিউজে শিক্ষা সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের আপডেট সবার আগে জানতে শিক্ষা নিউজের সোসাল হ্যান্ডেলগুলো অনুসরণ করুন।
Discover more from Shikkha News | শিক্ষা নিউজ
Subscribe to get the latest posts sent to your email.