ভূমিকা
জ্ঞান মানুষের মনকে উন্মুক্ত করে। এই জ্ঞান অর্জনের একমাত্র পথ হলো শিক্ষা। শিক্ষা আমাদের ভেতরের গুণগুলোকে জাগিয়ে তোলে এবং আমাদের একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। আর এই শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো বিদ্যালয়। আমি এমনই একটি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি, যা আমাদের এলাকার মধ্যে সবচেয়ে নামকরা এবং আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
অবস্থান
আমাদের বিদ্যালয়ের নাম নারায়ণগঞ্জ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এটি নারায়ণগঞ্জ জেলার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। শহরের ব্যস্ততার মাঝেও বিদ্যালয়টি একটি শান্ত ও মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে। এটি ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। দীর্ঘদিন ধরে এই বিদ্যালয়টি একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। এর সুনাম এলাকার সবার মুখে মুখে।
বিদ্যালয় ভবনের বর্ণনা
আমাদের বিদ্যালয় একটি তিনতলা ভবন। এতে মোট ২৫টি কক্ষ রয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য ১৮টি কক্ষে নিয়মিত ক্লাস হয়। বাকি কক্ষগুলোর মধ্যে একটি প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়, দুটি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিশ্রাম কক্ষ, একটি অফিস, একটি পাঠাগার, একটি বিজ্ঞানাগার এবং একটি অডিটোরিয়াম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাঠাগারে প্রচুর বই রয়েছে, যা আমাদের জ্ঞানের ভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করে। বিজ্ঞানাগারে আমরা ব্যবহারিক শিক্ষা লাভ করি।
ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা
আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় দেড় হাজার ছাত্রী পড়াশোনা করে। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ২৬ জন। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদের সঙ্গে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেন। তাঁদের শেখানোর ধরন এত সহজ ও আকর্ষণীয় যে পড়াশোনা আমাদের কাছে আনন্দের বিষয় হয়ে ওঠে। আমরা ছাত্রীরাও একে অপরের সঙ্গে ভাইবোনের মতো সম্পর্ক রাখি এবং সবাই মিলে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে চলি।
পড়াশোনার পদ্ধতি
আমাদের বিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য একটি সুশৃঙ্খল পদ্ধতি রয়েছে। প্রতি বছর প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক এবং বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে বা মাসে একাধিক শ্রেণি পরীক্ষা নেওয়া হয়, যাতে আমাদের পড়াশোনার অগ্রগতি যাচাই করা যায়। বছরের শেষে তিনটি পরীক্ষার নম্বরের গড় করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। আমাদের বিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফল সবসময়ই অসাধারণ। নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যে ফলাফল ও পড়াশোনার মানের দিক থেকে আমাদের বিদ্যালয় শীর্ষে থাকে।
খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
আমাদের বিদ্যালয়ে একটি বিশাল খেলার মাঠ রয়েছে। মাঠের চারপাশে কৃষ্ণচূড়া, শিমুল, রাধাচূড়া, পলাশের মতো রঙিন গাছ আর সবুজ ঘাসের সমারোহ। টিফিনের সময় বা বিদ্যালয় ছুটির পর মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবলসহ নানা খেলাধুলা হয়। প্রতি বছর বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে ছাত্রীরা গান, নাচ, কবিতা আবৃত্তি ও নাটক পরিবেশন করে। এছাড়া পরীক্ষার পর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে আমরা বনভোজনে যাই, যা আমাদের মনে আনন্দের স্মৃতি রেখে যায়।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য
আমাদের বিদ্যালয়ের পরিবেশ পড়াশোনার জন্য আদর্শ। বিদ্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে সবুজ গাছপালা আর শান্ত পরিবেশ মনকে প্রফুল্ল রাখে। শিক্ষকদের পড়ানোর ধরন এবং ছাত্রীদের একে অপরের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব এই বিদ্যালয়কে অনন্য করে তুলেছে। পরীক্ষার ফল, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দিক থেকে আমাদের বিদ্যালয় এলাকার মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে। এই বিদ্যালয়ের সুনাম এখন অনেক দূর ছড়িয়ে পড়েছে।
উপসংহার
আমাদের বিদ্যালয় একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব গুণ বহন করে। এখানে পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। এই বিদ্যালয় আমাকে শুধু জ্ঞানই দিচ্ছে না, একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে। আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও আমাদের বিদ্যালয় তার ঐতিহ্য আর সুনাম ধরে রাখবে।
শিক্ষা নিউজে শিক্ষা সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের আপডেট সবার আগে জানতে শিক্ষা নিউজের সোসাল হ্যান্ডেলগুলো অনুসরণ করুন।
Discover more from Shikkha News | শিক্ষা নিউজ
Subscribe to get the latest posts sent to your email.