এখানে আপনি জানতে পারবেন স্মার্ট টিভি ল্যাপটপ পাচ্ছে প্রাকপ্রাথমিকের ১৫০০ বিদ্যালয় ২০২৫ সম্পর্কে তথ্য। দেশের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকে আরও আধুনিক ও আকর্ষণীয় করতে বড় উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রায় ১৫০০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্মার্ট টিভি এবং ল্যাপটপ সরবরাহ করা হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছে ‘নেক্সট জেনারেশন প্রাইমারি এডুকেশন প্রোগ্রাম (এনপিইপি)’ নামের একটি নতুন কর্মসূচির আওতায়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে। লক্ষ্য হলো ৪ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের শিক্ষাকে আরও মজাদার এবং কার্যকর করা।
৩০ এপ্রিল, বুধবার, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ কামরুল হাসানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই কর্মসূচির জন্য ইতোমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এতে শিক্ষার মান উন্নত করতে স্মার্ট টিভি ও ল্যাপটপ সরবরাহের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শিশুদের শেখার অভিজ্ঞতা আরও সহজ এবং আনন্দদায়ক হবে বলে মনে করছে অধিদপ্তর।
কোন বিদ্যালয়গুলো পাবে এই সুবিধা
সব বিদ্যালয়ই এই সুবিধা পাবে না। শুধু যেসব বিদ্যালয় নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করবে, তারাই এই স্মার্ট টিভি ও ল্যাপটপ পাবে। শর্তগুলো হলো-
- প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আলাদা এবং সুসজ্জিত শ্রেণিকক্ষ থাকতে হবে।
- শ্রেণিকক্ষে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকতে হবে।
- শ্রেণিকক্ষে মজবুত দরজা-জানালা এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- দপ্তরী বা নৈশপ্রহরী থাকতে হবে।
- আইটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং ডিজিটাল কনটেন্ট পরিচালনায় দক্ষ শিক্ষক থাকতে হবে।
- ৪ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু থাকতে হবে।
বিভাগভিত্তিক বরাদ্দ
সরকার বিভাগভিত্তিক বিদ্যালয় নির্বাচন করেছে। বরাদ্দের তালিকা এরকম-
- ঢাকা বিভাগ: ২৫০টি বিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম বিভাগ: ২০০টি বিদ্যালয়
- খুলনা, রাজশাহী, রংপুর বিভাগ: প্রতিটি থেকে ২০০টি বিদ্যালয়
- বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগ: প্রতিটি থেকে ১৫০টি বিদ্যালয়
মোট ১৫০০ বিদ্যালয় এই সুবিধা পাবে। এই বরাদ্দ নিশ্চিত করবে যে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের শিশুরা আধুনিক শিক্ষার সুযোগ পাবে।
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ৪ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু করা বিদ্যালয়গুলো থেকে উপযুক্ত বিদ্যালয় বাছাই করা হবে। বিভাগীয় উপপরিচালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শর্ত অনুযায়ী বিদ্যালয়ের তালিকা তৈরি করতে। এই তালিকা নির্ধারিত তথ্য ছকে পূরণ করে আগামী ৪ মে’র মধ্যে ই-মেইল (dpepreprimary@gmail.com) এবং হার্ড কপি উভয়ভাবে পাঠাতে হবে।
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা শিশুদের মানসিক ও শিক্ষাগত বিকাশের ভিত্তি তৈরি করে। স্মার্ট টিভি এবং ল্যাপটপের মতো প্রযুক্তি ব্যবহারে শিশুরা দৃশ্যমান এবং শ্রবণযোগ্য কনটেন্টের মাধ্যমে শিখতে পারবে। এতে শিক্ষা কেবল বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং আরও জীবন্ত এবং বাস্তবসম্মত হবে। উদাহরণস্বরূপ, শিশুরা অ্যানিমেশনের মাধ্যমে গণিত বা বাংলা অক্ষর শিখতে পারবে, যা তাদের মনোযোগ ধরে রাখবে।
এছাড়া, প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের মাধ্যমে ডিজিটাল কনটেন্ট সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে শিক্ষার মান আরও উন্নত হবে। এই প্রযুক্তি শিশুদের প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করবে, যা ভবিষ্যতে তাদের ডিজিটাল দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
এই উদ্যোগ শুধু প্রযুক্তি সরবরাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে শিক্ষকদের জন্য আরও আইটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। এছাড়া, বিদ্যালয়গুলোতে ইন্টারনেট সংযোগ এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। এতে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্ভব হবে।
শেষ কথা
সরকারের এই উদ্যোগ প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকে নতুন মাত্রা দেবে। শিশুরা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করবে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শক্ত ভিত্তি তৈরি করবে।
শিক্ষা নিউজে শিক্ষা সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের আপডেট সবার আগে জানতে শিক্ষা নিউজের সোসাল হ্যান্ডেলগুলো অনুসরণ করুন।
Discover more from Shikkha News | শিক্ষা নিউজ
Subscribe to get the latest posts sent to your email.