মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীদের ইএফটি (Electronic Fund Transfer) তথ্য সংশোধনের জন্য একটি সময়সূচী বেঁধে দিয়েছে। ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন ও ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্যে ভুল থাকায় সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এই সংশোধন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন না হলে, এমপিও (Monthly Payment Order) স্থগিত হয়ে যেতে পারে।
শিক্ষক-কর্মচারীদের ইএফটি সংশোধনের প্রয়োজনীয় তথ্য
শিক্ষক-কর্মচারীদের তিনটি প্রধান তথ্য সংশোধন করতে হবে:
১. এমপিও শিট
২. জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)
৩. ব্যাংক হিসাব নম্বর
এই তথ্যগুলো সংশোধনের জন্য নির্ধারিত সময়সূচী এবং প্রক্রিয়া নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
শিক্ষক-কর্মচারীদের ইএফটি তথ্য সংশোধনের সময়সূচী নির্ধারণ
তথ্যের ধরন | সংশোধনের শেষ তারিখ |
---|---|
এমপিও শিট | ৬ মার্চ |
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) | ৭ এপ্রিল |
ব্যাংক হিসাব নম্বর | ৭ এপ্রিল |
শিক্ষক-কর্মচারীদের ইএফটি তথ্য সংশোধনের প্রক্রিয়া
১. এমপিও শিট সংশোধন
এমপিও শিটের তথ্য সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে ৬ মার্চের মধ্যে। সংশোধনের জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
- ইএমআইএস (EMIS) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
- প্রতিষ্ঠান প্রধানের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগইন করুন।
- এমপিও কারেকশন অপশনে ক্লিক করুন।
- প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধন করে সাবমিট করুন।
২. জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যে ভুল থাকলে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে ৭ এপ্রিলের মধ্যে।
৩. ব্যাংক হিসাব নম্বর সংশোধন
ব্যাংক হিসাব নম্বর সংক্রান্ত ভুল থাকলে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করে তথ্য সংশোধন করতে হবে। এই প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করতে হবে ৭ এপ্রিলের মধ্যে।
শিক্ষক-কর্মচারীদের ইএফটি তথ্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
- ৭ এপ্রিলের মধ্যে সকল তথ্য সংশোধন করতে হবে। এই সময়সীমার মধ্যে সংশোধন করা না হলে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে এমপিও স্থগিত হয়ে যাবে।
- সংশোধনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর, সংশ্লিষ্ট তথ্য যাচাই করে নিন।
- প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উচিত শিক্ষক-কর্মচারীদের এই বিষয়ে সচেতন করা এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা।
ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন ও ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যে ভুল থাকলে, বেতন পেতে বিলম্ব বা অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, এমপিও স্থগিত হলে শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এই নির্দেশনা মেনে চললে, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়া আরও সুসংহত হবে। সংশোধনের সময়সূচী এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংশোধন সম্পন্ন করুন। এই বিষয়ে আরও কোন প্রশ্ন বা সহায়তা প্রয়োজন হলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করুন।
বর্তমানে ইএফটি (Electronic Fund Transfer) পদ্ধতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন প্রদান করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে তথ্যের সঠিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে দেখা যাচ্ছে, অনেকের তথ্যে ভুল থাকায় বেতন প্রদানে বিলম্ব বা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের তথ্য যাচাই ও সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই লেখায় আমরা বুঝবো, কাদের তথ্য সংশোধন করতে হবে এবং কীভাবে এটি করতে হবে।
শিক্ষক-কর্মচারীদের ইএফটি তথ্য কাদের তথ্য সংশোধন করতে হবে
ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন পাওয়া ব্যক্তিদের তথ্য সংশোধনের প্রক্রিয়া দুটি ধাপে বিভক্ত—
- ১ম ধাপ: যারা ইতিমধ্যে ইএফটির মাধ্যমে বেতন পেয়েছেন, তাদের তথ্য সাধারণত সঠিক আছে। তাদের তথ্য সংশোধনের প্রয়োজন নেই।
- ২য় ধাপ ও পরবর্তী: যারা এখনও বেতন পাননি বা ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম ধাপে রয়েছেন, তাদের তথ্যে ভুল থাকার সম্ভাবনা বেশি। তাই তাদের সকলের তথ্য যাচাই করে সংশোধন করতে হবে।
তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে এসএসসি সমমানের সনদকে মূল ভিত্তি হিসেবে ধরা হবে। অর্থাৎ, আপনার সকল তথ্য এই সনদের সাথে মিল থাকতে হবে। নিচের টেবিলে তথ্য সংশোধনের প্রক্রিয়াটি সহজভাবে বোঝানো হলো—
ডকুমেন্ট | যাচাই করার বিষয় | করণীয় |
---|---|---|
এসএসসি সমমানের সনদ | নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্মতারিখ ইত্যাদি | এটি হবে আপনার তথ্যের মূল ভিত্তি। |
এমপিও শিট | সনদের সাথে নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্মতারিখ মিল আছে কিনা | যদি না মিলে, তাহলে এমপিও শিট সংশোধন করুন। |
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) | সনদ ও এমপিও শিটের সাথে নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্মতারিখ মিল আছে কিনা | যদি না মিলে, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করুন। |
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট | ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নাম সনদ, এমপিও শিট ও NID-এর সাথে হুবহু মিল আছে কিনা | যদি না মিলে, তাহলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নাম সংশোধন করুন। |
তথ্য সংশোধন না করলে ইএফটির মাধ্যমে বেতন পাওয়া যাবে না। অনেক সময় নামের বানান, পিতার নাম বা জন্মতারিখে সামান্য অমিল থাকলেও সমস্যা দেখা দেয়।
- এমপিও শিটে নাম সঠিক আছে, কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের বানান ভুল। সেক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে হবে।
- এমপিও শিটে নাম সঠিক না থাকলে, সনদ অনুযায়ী এমপিও শিটের নাম সংশোধন করতে হবে।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নামও সনদ ও এমপিও শিটের সাথে হুবহু মিলাতে হবে। অন্যথায়, বেতন ট্রান্সফার হবে না।
শিক্ষক-কর্মচারীদের ইএফটি তথ্য সংশোধনের প্রক্রিয়া
- এসএসসি সনদ সংগ্রহ: প্রথমে আপনার এসএসসি বা সমমানের সনদ সংগ্রহ করুন। এটি হবে আপনার তথ্যের মূল ভিত্তি।
- এমপিও শিট যাচাই: এমপিও শিটের তথ্য সনদের সাথে মিলিয়ে দেখুন। যদি কোনও ভুল থাকে, সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করে সংশোধন করুন।
- জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই: NID-এর তথ্য সনদ ও এমপিও শিটের সাথে মিলিয়ে দেখুন। ভুল থাকলে সংশোধন করুন।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যাচাই: ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নাম সনদ, এমপিও শিট ও NID-এর সাথে মিলিয়ে দেখুন। প্রয়োজনে ব্যাংকে যোগাযোগ করে নাম সংশোধন করুন।
ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন পাওয়ার জন্য তথ্যের সঠিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা এখনও বেতন পাননি বা তাদের তথ্যে ভুল আছে, তাদের দ্রুত তথ্য সংশোধন করা উচিত। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে বেতন প্রদানে কোনও বাধা থাকবে না এবং সময়মতো বেতন পাওয়া যাবে। সকলকে এই নির্দেশিকা অনুসরণ করার অনুরোধ করা হলো।মনে রাখবেন, সঠিক তথ্যই আপনাকে সঠিক সেবা নিশ্চিত করবে। তাই সময় নিন, যাচাই করুন এবং সংশোধন করুন। এমপিও ও ইএফটি সম্পর্কিত তথ্য শিক্ষা নিউজের এই বিভাগে পাবেন। বন্ধুরা, আপনি এই ধরনের তথ্যের আপডেট নোটিফিকেশন সবার আগে পেতে শিক্ষা নিউজের হোয়াটসয়াপ চ্যানেলে যুক্ত থাকুন।