শিক্ষার্থীদের জন্য একটি দারুণ সুখবর! প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের তথ্য অনলাইনে পাঠানোর সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে, একাদশ, আলিম প্রথম বর্ষ এবং ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ, নবম (বিশেষ ক্ষেত্রে) ও সমমান শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এইচএসপি-এমআইএস সফটওয়্যারে তাদের তথ্য ১৫ মে, ২০২৫ পর্যন্ত জমা দিতে পারবে। এর আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সময়সীমা ছিল ৩০ এপ্রিল এবং উপজেলা পর্যায়ে ৭ মে পর্যন্ত। এই সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুযোগ নিয়ে এসেছে।
উপবৃত্তি সংক্রান্ত নোটিশ ২০২৫
৪ মে, ২০২৫ তারিখে ট্রাস্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। স্কিম পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আসাদুল হকের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশেষ বিবেচনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তথ্য এন্ট্রি ও উপজেলায় পাঠানোর সময়সীমা ১৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে, ১৫ মে রাত ১২টার পর সফটওয়্যারের এই অপশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
এছাড়া, উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের জন্যও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো তথ্য যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এইচএসপি বা পিএমইএটিতে পাঠানোর সময়সীমা বাড়িয়ে ২০ মে, ২০২৫ করা হয়েছে। কোনো সমস্যা হলে সাহায্যের জন্য অফিস সময়ে (সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা) ০১৩১৬৬৫৮২৩০ এবং ০১৩১৬৬৫৮৫২৯ নম্বরে ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের এই উপবৃত্তি কর্মসূচি দেশের অসংখ্য শিক্ষার্থীর জন্য আর্থিক সহায়তার একটি বড় উৎস। এই কর্মসূচির মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। উপবৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীদের বই, খাতা, স্কুল ড্রেস এবং অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ কেনার কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া, এই অর্থ কিছু পরিবারের জন্য শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠানোর প্রণোদনা হিসেবে কাজ করে।
সময়সীমা বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি সুবিধা নিয়ে এসেছে। অনেক শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠান সময়মতো তথ্য জমা দিতে না পারার কারণে উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হতো। নতুন সময়সীমা এই সমস্যার সমাধান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উপবৃত্তি তথ্য জমার প্রক্রিয়া
উপবৃত্তির জন্য তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া খুবই সহজ, তবে এটি সঠিকভাবে এবং সময়মতো করা জরুরি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এইচএসপি-এমআইএস সফটওয়্যারে শিক্ষার্থীদের নাম, শ্রেণি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য এন্ট্রি করবে। এরপর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা তথ্য যাচাই করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠাবেন।
প্রক্রিয়া | পূর্বের সময়সীমা | নতুন সময়সীমা | দায়িত্বপ্রাপ্ত |
---|---|---|---|
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্য এন্ট্রি | ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৫ মে, ২০২৫ | শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান/শিক্ষক |
উপজেলায় তথ্য পাঠানো | ৭ মে, ২০২৫ | ১৫ মে, ২০২৫ | শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান |
তথ্য যাচাই ও চূড়ান্ত অনুমোদন পাঠানো | ৭ মে, ২০২৫ | ২০ মে, ২০২৫ | উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তা |
শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু পরামর্শ
শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা তথ্য জমা দেওয়ার বিষয়ে অবগত থাকে না, ফলে সময়সীমা পার হয়ে যায়। শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের তথ্য সঠিকভাবে জমা হয়েছে। এছাড়া, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য সঠিক কিনা তাও যাচাই করে নেওয়া উচিত।
যদি কোনো শিক্ষার্থী বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথ্য জমা দেওয়ার সময় কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়, তবে তারা উল্লিখিত হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারে। এই হেল্পলাইনগুলো শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার জন্যই চালু করা হয়েছে।
এই উপবৃত্তি কর্মসূচি দেশের শিক্ষা খাতে বড় প্রভাব ফেলেছে। গ্রামাঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থী, বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীরা, এই অর্থের কারণে নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উপবৃত্তি কর্মসূচির কারণে মাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার অনেক কমেছে। এছাড়া, এই কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে।
নতুন সময়সীমা বাড়ানোর ফলে আরও বেশি শিক্ষার্থী এই সুবিধা পাবে। এটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও সুবিধাজনক, কারণ তারা এখন তথ্য সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার জন্য বাড়তি সময় পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ভবিষ্যতে এই কর্মসূচিকে আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা করছে। আরও বেশি শিক্ষার্থীকে এই সুবিধার আওতায় আনতে নতুন নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, তথ্য জমার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের উন্নতি সাধন করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের জন্য এই উপবৃত্তি কর্মসূচি শুধু আর্থিক সাহায্য নয়, এটি তাদের স্বপ্ন পূরণের একটি পথ। সময়সীমা বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
শিক্ষা নিউজে শিক্ষা সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের আপডেট সবার আগে জানতে শিক্ষা নিউজের সোসাল হ্যান্ডেলগুলো অনুসরণ করুন।
Discover more from Shikkha News | শিক্ষা নিউজ
Subscribe to get the latest posts sent to your email.