প্রতি বছর মাধ্যমিক পর্যায়ে এসএসসি পরীক্ষা (SSC Exam) অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে লাখ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এ বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, অনেক শিক্ষার্থীই ছোট ছোট ভুলের কারণে ফেল করে। এই ভুলগুলো এড়ানো গেলে পরীক্ষায় সাফল্য অনেকটাই নিশ্চিত করা যায়। তাই আজ আমরা এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব, যা শিক্ষার্থীদের জন্য জানা খুবই জরুরি।
ভুলের ধরন | কারণ | সমাধান |
---|---|---|
ওএমআর শিটে ভুল | তাড়াহুড়ো বা অমনোযোগিতা | সঠিকভাবে রোল ও রেজিস্ট্রেশন লেখা |
দেরিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছা | সময়ের হিসাব না করা | ৩০ মিনিট আগে উপস্থিত থাকা |
নকল বা দেখাদেখি | প্রস্তুতির অভাব | নিজের পড়াশোনায় ভরসা রাখা |
নার্ভাসনেস | প্রথম দিনের চাপ | বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া |
এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করার কারণ
এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করার পেছনে কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে। প্রথমত, ওএমআর শিটে ভুল (OMR Sheet Mistake)। অনেক শিক্ষার্থী তাড়াহুড়ো করে বা মনোযোগ না দিয়ে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর বা উত্তর চিহ্নিত করতে ভুল করে। এই ছোট ভুলের জন্য পুরো পরীক্ষার ফল খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই পরীক্ষার সময় সঠিকভাবে রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয়ত, অনেকে পরীক্ষার সময় দেরি করে আসে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে আসন গ্রহণ করার নিয়ম থাকলেও, অনেকে এটা মানে না। আমি বলব, চেষ্টা করতে হবে আরও ৩০ মিনিট আগে, মানে পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে পৌঁছে যেতে। এতে সময়ের চাপ কমবে, আর মনটাও শান্ত থাকবে।
তৃতীয়ত, নকল করা বা দেখাদেখি করা। পরীক্ষার হলে এমন কিছু করতে গেলে শিক্ষক সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দিতে পারেন। এমনকি পরীক্ষা বাতিলও হতে পারে। তাই নিজের পড়াশোনার ওপর ভরসা রাখতে হবে। নকলের চিন্তা মাথায় না এনে বরং নিজের প্রস্তুতি ভালো করে নিতে হবে।
প্রথম দিনের নার্ভাসনেস যেভাবে কমাবেন
প্রথম পরীক্ষার দিন শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি নার্ভাস থাকে। এটা খুবই স্বাভাবিক। আমার মনে আছে, আমার এক বন্ধু প্রথম দিন এতটাই ঘাবড়ে গিয়েছিল যে, ওএমআর শিটে নিজের নামই ভুল লিখে ফেলেছিল! তাই এই দিনটায় একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। তাদের উপস্থিতি মনের জোর বাড়িয়ে দেয়। আরেকটা কথা, পরীক্ষার দিন সকালে ভারী খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বদহজম বা অস্বস্তি হলে পরীক্ষার সময় মন বসবে না। তার চেয়ে হালকা আর স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ভালো।
আমি আরেকটা পরামর্শ দিতে চাই—সকালে গোসল করে যাওয়া। এটা শুনে হয়তো হাসি পাবে, কিন্তু সত্যি বলছি, গোসল করলে শরীর-মন দুটোই ফ্রেশ থাকে। পরীক্ষার হলে গিয়ে মনে হবে, “আমি তৈরি!”
পরীক্ষার হলে কী করবেন, কী করবেন না
পরীক্ষার সময় কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। যেমন, হাজিরা খাতায় সব তথ্য সঠিকভাবে লিখতে হবে। কোনো ভুল হলে দেরি না করে শিক্ষকের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে হবে। অনেকে লজ্জা পায় বা ভয় পায়, কিন্তু এটা একদম ঠিক না। শিক্ষকরা তো সাহায্য করতেই আছেন।
আরেকটা বড় বিষয় হলো, প্রতিটি বিষয়ে আলাদা পাস করতে হবে। যেমন, সৃজনশীল প্রশ্নে (Creative) আলাদা পাস, বহুনির্বাচনীতে (MCQ) আলাদা পাস। তাই আগে থেকে জেনে নিতে হবে, কোন বিষয়ে পাস নম্বর কত। এটা না জানলে পরীক্ষার প্রস্তুতিও ঠিকঠাক হবে না।
কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ
আমার এক কাজিন এসএসসি পরীক্ষার সময় এতটাই তাড়াহুড়ো করেছিল যে, ওএমআর শিটে ভুল বৃত্ত ভরে ফেলে। পরে শিক্ষকের কাছে গিয়ে সেটা ঠিক করতে হয়েছিল। তাই আমি বলব, পরীক্ষার সময় একটু ধীরে-সুস্থে কাজ করতে হবে। তাড়াহুড়ো করলে ভুলের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
আরেকটা কথা, পরীক্ষার আগে ভালো ঘুম দরকার। অনেকে রাত জেগে পড়ে, কিন্তু পরীক্ষার সময় ঘুম ঘুম ভাব থাকে। তাই রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
এসএসসি পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের জীবনে একটা বড় ধাপ। এখানে সফল হতে হলে প্রস্তুতির পাশাপাশি ছোট ছোট বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। সঠিক সময়ে উপস্থিতি, নকল থেকে দূরে থাকা, আর ওএমআর শিটে সতর্কতা—এগুলো মেনে চললেই অনেক সমস্যা এড়ানো যাবে। পরীক্ষা শুধু পড়াশোনার পরীক্ষা নয়, ধৈর্য আর মনোযোগেরও পরীক্ষা। তাই শিক্ষার্থীদের বলব, নিজের ওপর ভরসা রাখুন, আর পরীক্ষার হলে শান্ত থাকুন। শিক্ষা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো পেতে শিক্ষা নিউজ ওয়েবসাইটের পোষ্টগুলো নিয়মিত পড়ুন এবং শিক্ষা নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন।
শিক্ষা নিউজে শিক্ষা সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের আপডেট সবার আগে জানতে শিক্ষা নিউজের সোসাল হ্যান্ডেলগুলো অনুসরণ করুন।
Discover more from Shikkha News | শিক্ষা নিউজ
Subscribe to get the latest posts sent to your email.