সমরেশ মজুমদারের লেখা সাতকাহন উপন্যাস বাংলা সাহিত্যের এক অমর রত্ন। এই উপন্যাসের গল্প মন ছুঁয়ে যায়, যেমন নদীর জল ধীরে ধীরে বয়ে চলে। আপনি চাইলে এই বইয়ের সাতকাহন উপন্যাস PDF সম্পূর্ণ ফ্রি ডাউনলোড করতে পারেন। আজকের দিনটা যেন গল্পের মতোই মেঘলা। সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। কাঠ-কয়লার মতো কালো মেঘ ভুটানের পাহাড় থেকে নেমে এসে আকাশ জুড়ে থম মেরে আছে। সারাদিনটা কেটে গেল একটা গভীর আলসেমিতে, মনে হচ্ছে যেন সময় থেমে গেছে।
শেষ বিকেলে হঠাৎ একটু বাতাস বইল। বাতাসে বৃষ্টির গন্ধ, মনে হলো কাছেপিঠে কোথাও বৃষ্টি ঝরে গেছে। চারপাশটা শীতল হয়ে উঠল, ঠিক যেন সাতকাহন বইয়ের পাতায় বর্ণিত কোনো দৃশ্য। এই উপন্যাসে সমরেশ মজুমদার মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখ, ভালোবাসা আর সংগ্রামের গল্প বুনেছেন। প্রতিটা চরিত্র যেন আমাদের চেনা, আমাদের পাশের বাড়ির মানুষ।
সমরেশ মজুমদারের সাতকাহন উপন্যাস PDF
আপনি যদি বইটা পড়তে চান, তাহলে নিচে দেওয়া লিঙ্ক থেকে সাতকাহন উপন্যাস pdf ফ্রি ডাউনলোড করতে পারেন। তার আগে বইয়ের কিছু অংশ পড়ে নিন, যা আমরা নিচে দিয়েছি। এই বইয়ের প্রতিটা পাতায় লুকিয়ে আছে জীবনের গভীর কথা। তাই দেরি না করে আজই পড়া শুরু করুন। সাতকাহন উপন্যাস আপনার মন ভরিয়ে দেবে, এটা আমাদের বিশ্বাস।
সাতকাহন উপন্যাস সারাংশ
মাঠের ওপর আজ একটা তুলতুলে আলো ছড়ানো। যেন চকলেট মুখে দিলে জিভে যে মিষ্টি ভাবটা থেকে যায়, তেমনই একটা অনুভূতি। দেওদার গাছের মাথায়, কোয়ার্টার্সের টিনের চালে, সব জায়গায় আলোটা নেতিয়ে পড়ছে। মুখ তুলে আকাশ দেখলে মনে হয়, মেঘগুলো বুঝি হাওয়ার ধাক্কা সইতে না পেরে ছুটে নেমে এসেছে। কিন্তু আজ বৃষ্টি হবে না। এই মেঘগুলো শীতের ঠান্ডা দাঁতের কামড়ে কুঁকড়ে যাবে। দু-তিন দিন এমন চলার পর বৃষ্টির ফোঁটা ঝরবে। চা-বাগান, মাঠ, কোয়ার্টার্স, আসাম রোড—সব ভিজে যাবে। তেমাথা বুড়ির মতো সব অসাড় হয়ে থাকবে। তারপর শীত নামবে জাঁকিয়ে। আজকের মেঘ যেন বুধবারের তরকারির কোটা, রান্নাঘরে মায়ের উনুনে কড়াই চড়তে এখনো অনেক দেরি।
মাঠের মাঝখানে একটা চাঁপা ফুলের গাছ। তার নিচে দাঁড়িয়ে দীপা। সিরসিরে হাওয়ায় শরীরটা একটু কেঁপে উঠছে। হঠাৎ চিৎকার করে বলল, “তাড়াতাড়ি কর, আমার শীত করছে!” ওপর থেকে কোনো উত্তর নেই। গাছের ডালে ডালে পা দিয়ে কেউ উঠছে। হাওয়া তার পাঁজরেও কাঁপন তুলছে। কিন্তু সে মরিয়া। হাত বাড়াচ্ছে সদ্য ফোটা সোনালী চাঁপা ফুলের দিকে। এই বছর ওই গাছে প্রথম কুঁড়ি ফুটেছে। সে লক্ষ করেছে। তাই এই জেদ। কিন্তু ফুলটা যেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। পায়ের চাপে ডালটা দুলছে, ফুলটাও দুলছে। দীপা আবার চিৎকার করল। এবার তার মনোযোগ নষ্ট হলো। আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে ভয় ঢুকল। কোয়ার্টার্সে শাঁখ বাজছে। হঠাৎ পাতাসুদ্ধ ফুলটা হাতে চলে এল। তরতর করে ডাল বেয়ে নামতেই দেখে, দীপা নেই।
মাঠটা দৌড়ে পার হতেই শীত উধাও। ঘন ঘন নিঃশ্বাসে শরীর গরম। দীপা দাঁড়িয়ে গেল। সামনের গেট দিয়ে ঢুকলে এখন একশোটা বকুনি খেতে হবে। চাঁপা ফুলটা হাতে নিয়ে তার মনে একটা মিশ্র অনুভূতি। ফুল পেয়েছে, কিন্তু দীপার চিৎকার এখনো কানে বাজছে। শীতের এই মাঠে চাঁপা ফুলের গাছটা যেন একটা গল্প বলছে। প্রকৃতির রঙ আর শীতের হাওয়ায় মিশে সে গল্প আরো জীবন্ত। এই শীতের দিনে মাঠে দাঁড়ালে মনে হয়, প্রকৃতি নিজেই একটা কবিতা লিখছে।
চাঁপা ফুলের মতোই শীতের মাঠে ছোট ছোট আনন্দ লুকিয়ে থাকে। দীপার চিৎকার, ফুল তোলার জেদ, সব মিলিয়ে একটা স্মৃতি তৈরি হয়। এই গল্প শুধু ফুল আর মাঠের নয়, বরং আমাদের ছোটবেলার দুষ্টুমিরও। শীতের হাওয়ায় কাঁপতে কাঁপতে আমরা সবাই কখনো না কখনো এমন ফুলের পেছনে ছুটেছি।
শেষ কথা
আশাকরি বন্ধুরা আপনারা যারা সমরেশ মজুমদারের সাতকাহন উপন্যাস PDF খুজছিলেন তারা শিক্ষা নিউজের এই লেখাটিতে পেয়েছেন। আশাকরি উপকৃত হয়েছেন আপনারা। আর বন্ধুরা, এমন আরও লেখা পড়তে শিক্ষা নিউজের এই ক্যাটাগরি ঘুরে পড়ে দেখতে পারেন।
শিক্ষা নিউজে শিক্ষা সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের আপডেট সবার আগে জানতে শিক্ষা নিউজের সোসাল হ্যান্ডেলগুলো অনুসরণ করুন।
Discover more from Shikkha News | শিক্ষা নিউজ
Subscribe to get the latest posts sent to your email.